পৃথিবীর দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

প্রিয় পাঠক, আপনারাি কখন, কিভাবে দেখতে যাবেন সেটা নিয়ে বেশ চিন্তিত। অপরুপ রুপ বৈচিত্রে ভরপুর এই সমুদ্র সৈকত । চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করব কখন, কিভাবে আপনারা পৃথিবীর দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেখতে যাবেন ।
পৃথিবীর দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

প্রিয় আর্টিকেল পাঠক, আপনাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমি পৃথিবীর দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত নিয়ে বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করেছি। বিস্তারিত জানতে আমার সাথেই থাকুন 

ভূমিকাঃ

 কক্সবাজার পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত । যা বাংলাদেশর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম প্রাকৃতিক শোভামন্ডিত বৃহত্তম পর্যটন শহর। এটি বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা কক্সবাজারে অবস্থিত। অনেকগুলো বীচের সমন্বয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত গঠিত। সারি সারি ঝাউবন, পাহাড়,ঝর্ণা,বালুর নরম বিছানা মোড়ানো এক বিশালাকায় সমুদ্র সৈকত। বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশি আর শোঁ শোঁ পানির গর্জনের মনোমুগ্ধকর শব্দ মানুষের মন মাতিয়ে দেয়।

 এ যেন এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অবারিত লীলাভূমি। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক আমাদের দেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এই সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ করতে আসে। যার রুপ রহস্য সত্যিই অবর্ণনীয়।

সৈকত শব্দের অর্থ কি ?

সৈকত শব্দের অর্থ হচ্ছে নদী বা সমুদ্র ইত্যাদির মৃদু ঢালযুক্ত বালুকাময় তীর

কক্সবাজারের প্রচীন নাম কি ?

হিরাম কক্স নামে ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন অফিসারের নাম অনুসারে কক্সবাজার নামটির উৎপত্তি। এক সময়ে কক্সবাজারসহ পার্বত্য চট্রগ্রামের একটি বিরাট অংশ সাবেক বার্মার আরকান রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল। পরবর্তীতে বহু পথ পরিক্রমায় হিরাম কক্সের নাম অনুসারেই কক্সবাজারের নামকরণ করা হয়।  কক্সবাজারের প্রাচীন নাম পালংকি। এক সময় প্যানোয়া নামেও কক্সবাজারের বেশ পরিচিতি ছিল। যার অর্থ হলুদ ফুল। ১৮৫৪ সালে কক্সবাজার থানা গঠিত হয় এবং ১৮৬৯ সালে কক্সবাজার পৌরসভা গঠিত হয়।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত কোথায় অবস্থিত ?

পৃথিবীর দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা শহর কক্সবাজারে অবস্থিত ।চট্রগ্রাম শহর থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত প্রায় ১৫২ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং রজধানী শহর ঢাকা থেকে এটি প্রায় ৪১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি পৃথিবীর দীর্ঘতম অপরুপ শোভামন্ডিত নয়নাভিরাম মন মাতানো প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত।    

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের আয়তন কত কিলোমিটার ?

সৈকত শব্দের অর্থ বালুকাময় তীর। আর সেজন্যই সৈকতের তীর সঠিক ভাবে পরিমাপ করা বেশ কঠিন কাজ। সে কারণে পৃথিবীর দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এর দৈর্ঘ্যের ব্যাপারে যথেষ্ঠ দ্বিমত রয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য পৃথিবী বিখ্যাত। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম নিরবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুকাময় সমুদ্র সৈকত। এটি কক্সবাজার শহর থেকে দক্ষিণে বদরমোকাম পর্যন্ত প্রায় ১৫৫ কিলোমিটার বা ৯৭ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত । অনেকের মতে এটি প্রায় ১২০ কিলোমিটার বা ৭৫ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত ।

কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থানগুলোর নাম কি?

প্রকৃতি প্রেমিক পর্যটকদের জন্য পৃথিবীর দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত  এক অনন্য সুন্দর জায়গা যা মুখে বলে বর্ণনা করা কখনই সম্ভব নয়। কক্সবাজারের মন মাতানো অপরুপ দৃশ্য কিছু সময়ের জন্য মানুষকে সব দুঃখ, কষ্ঠ, ব্যথা, বেদনা, ক্লান্তি,অবসাদ ভুলিয়ে দেয়। কক্সবাজারে অসংখ্য সুন্দর সুন্দর ভ্রমন করার মত  জায়গা রয়েছে ।


তবে, যে জায়গাগুলো একেবারেই না দেখলে নয় সেগুলো হলো: কক্সবাজার সুমুদ্র সৈকত ,কক্সবাজার রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড ,লাবনী বীচ,কালাতলী বীচ,সুগন্ধা বীচ,ইনানী বীচ,সায়মান বীচ, হিমছড়ি শীতল পানির ঝর্ণা, সেন্টমার্টিন দ্বীপ , ছেঁড়া দ্বীপ,সোনাদিয়া দ্বীপ ,শাহপরীর দ্বীপ, ডুলাহাজরা সাফারী পার্ক, কুদুম গুহা, রামু মন্দির, রামু রাবার বাগান,কুতুবদিয়া বাতিঘর,নাইক্ষংছড়ি লেক ও ঝুলন্ত ব্রীজ  এবং বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ ইত্যাদি ।

পৃথিবীর দীর্কঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত কিসের জন্য বিখ্যাত ?

পৃথিবীর দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত  বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত জেলা শহর ,মৎস বন্দর,ও পর্যটন রাজধানী। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত তার আপন নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের জন্য সারা বিশ্বের মানুষের কাছে বিখ্যাত ও খুবই সমাদৃত। সারা বিশ্বের প্রকৃতি প্রেমিক মানুষগুলো প্রতিবছর এখানে বেড়াতে আসেন। কক্সবাজারে বিভিন্ন উপজাতী বা নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী বসবাস করে যা শহরটিকে করেছে আরও বৈচিত্রময়।

 উপজাতীয় মেয়েরা বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী নিয়ে দোকানের পরসা  সাজিয়ে বসে থাকেন। যে কোন পর্যটক সুলভ মূল্যে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পন্য ক্রয় করতে পারেন।  কক্সবাজার বাংলাদেশের অন্যতম স্বাস্থ্যকর স্থান হিসাবে পরিচিত। এখানে প্রতি বছর অনেক মানুষ হারানো স্বাস্থ্য ফিরে পাওয়ার জন্য বেড়াতে আসেন। এখানে রয়েছে বিশ্বের একমাত্র দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন সমুদ্র সৈকত যা প্রায় ১২০ কিলোমিটার লম্বা ।


পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান। বেসরকারী উদ্দ্যোগে এখানে নির্মিত হয়েছে অনেক বড় বড় হোটেল। বাংলাদেশ পর্যটন কেন্দ্র নির্মিত মোটেল ছাড়াও সৈকতের নিকটেই রয়েছে বেশ কয়েকটি পাঁচ তারকা মানের হোটেল। এছাড়াও এখানে পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে  বাহারি রংয়ের ঝিনুক মার্কেট। সীমান্ত পথে পার্শ্ববর্তী দেশ যেমন থাইল্যান্ড,চীন ও মিয়ানমার প্রভৃতি দেশ থেকে আসা বাহারি জিনিসপত্র নিয়ে গড়ে উঠেছে বার্মিজ মার্কেট।

আরও রয়েছে প্যারাসেলিং, ওয়াটার বাইকিং, বীচ বাইকিং, কক্সকার্নিভাল সার্কাস শো, দরিয়ানগর ইকোপার্ক, ফিউচারপার্ক, শিশুপার্ক। এছাড়াও এখানে উপভোগের জন্য রয়েছে নাইট বীচ কর্নসার্ট।

কক্সবাজারে অবস্থিত বীচগুলোর নাম কি ?

কক্সবাজারে অবস্থিত বীচগুলো হলোঃ লাবনী বীচ,কলাতলী বীচ ,সুগন্ধা বীচ ,ইনানী বীচ, সায়মান বীচ ,পাটুয়ারটেক বীচ,সোহনখালী বীচ,বেস্টওয়ে লং বীচ , সি পার্ল বীচ ও মারমোইড বীচ ইত্যাদি ।

পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ কোথায় অবস্থিত ?

পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ কক্সবাজারে অবস্থিত। এটি কক্সবাজারের কলাতলী সমুদ্র সৈকত থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। যার একপাশে রয়েছে সুবিস্তৃত সারি সারি পাহাড় এবং অন্য পাশে বঙ্গোপসাগরের নীলজল তারই মাঝে বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ আপনার কক্সবাজার  সমুদ্র সৈকত ভ্রমনকে করে তুলবে আর ও মনোমুগ্ধকর । প্রায় ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এটি বর্তমানে পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ ।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত যাওয়ার উপায় ।

রাজধানী শহর ঢাকা থেকে সড়ক পথে, বাসযোগে এবং বিমান পথেও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত যাওয়া যায়। চট্রগ্রাম থেকে কক্সাজারের টেকনাফ পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশর প্রায় সবগুলো জায়গা থেকে ট্রেনযোগে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত যাওয়া যাবে। যার মাধ্যমে কক্সবাজার পর্যটন শিল্পে আসবে এক বৈপ্লবিক পরির্বতন। যারা ঢাকা থেকে সরাসরি পৃথিবীর দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত  যেতে চান তারা বাসে করে সরাসরি কক্সবাজার যেতে পারবেন।


ঢাকার ফকিরাপুল, আরামবাগ,ও মতিঝিলসহ বেশ কয়েকটি স্থান থেকে প্রতিদিন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায় । বাস ভাড়া লাগবে জনপ্রতি ৮০০-২০০০ টাকা। এছাড়াও ট্রেনে চড়েও চট্রগ্রাম পর্যন্ত যেতে পারবেন। তারপর সেখান থেকে বাসে করে কক্সবাজার যেতে হবে। আবার আকাশ পথেও সরাসরি যেতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪