প্রকৃতির কন্যা জাফলং সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
প্রিয় পাঠক,আপনারা প্রকৃতির কন্যা জাফলং কখন, কিভাবে দেখতে যাবেন সেটা নিয়ে বেশ চিন্তিত।মোহনীয় রুপ লাবণ্যে ভরপুর সিলেটের জাফলং। চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করব কখন, কিভাবে আপনারা নয়নাভিরাম প্রকৃতির কন্যা জাফলং দেখতে যাবেন।
জাফলং কোথায় অবস্থিত ?
প্রকৃতির কন্যা হিসাবে দেশজুড়ে এক নামে পরিচিত নয়নাভিরাম সিলেটের জাফলং। এটি সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। প্রকৃতির কন্যা জাফলং সিলেট শহর থেকে প্রায় ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। জাফলং খাসিয়া -জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত অপরুপ রূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। পাহাড় ও নদীর অপর্ব মিলন জাফলং পর্যটনস্থলকে করে তুলেছে আরও মোহনীয় এবং রুপ লাবণ্যে ভরপুর।
জাফলং কিসের জন্য বিখ্যাত ?
প্রকৃতির কন্যা জাফলং বাংলাদেশের অনন্য সুন্দর মোহনীয় এক দর্শনীয় স্থান। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ প্রকৃতি প্রেমিক জাফলংয়ের অপরুপ রুপ সৌন্দর্য দেখতে আসেন। সবুজ পাহাড়ে ঘেরা ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেঁষে বাংলাদেশের সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলং অবস্থিত।পিয়াইন নদীর প্রবাহমান স্বচ্ছ পানির ধারা, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রীজ, সারি সারি সবুজ পাহাড় আর সাদা মেঘের ভেলা জাফলংকে করে তুলেছে অনন্য।
জাফলং এর দর্শনীয় স্থানসমূহ কি কি ?
প্রকৃতির কন্যা জাফলং এক অনন্য সুন্দর জায়গা। প্রকৃতি মোহনীয় রুপে রাঙ্গিয়ে তুলেছে জাফলংকে , যা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।" আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমাইও"।এখানে দুর থেকে তাকালে মনে হবে সারি সারি পাহাড় আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। ভাসমান মেঘমালা পাহাড়ের গায়ে নরম তুলোর মতো হাওয়াই ভেসে বেড়াচ্ছে । সব মিলিয়ে এ যেন এক রুপ কথার রাজ্য।
জাফলং এর কাছাকছি দর্শনীয় স্থানগুলো হলো ঃ
লালাখাল ।
তামাবিল ।
জৈন্তাপুর ।
মায়াবী ঝর্ণা ।
সংগ্রামপুঞ্জি চা বাগান ।
শাপলা বিল ।
বিছনাকান্দি ।
পানথুমাই ঝর্ণা ।
খাসিয়া পল্লী
প্রকৃতির কন্যা জাফলং এর অনন্য সুন্দর রুপের বর্ণনা।
প্রকৃতির কন্যা জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য অত্যন্ত সুপরিচিত, সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা নয়নাভিরাম পর্যটনকেন্দ্র। জাফলং খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত চোখ জোড়ানো মন ভোলানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি। পিয়াইন নদের তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তুপ এবং মেঘালয় পাহাড়ের বুক চিরে বয়ে আসা কাঁচের মতো স্বচ্ছ জলের ধারা পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এ ছাড়াও কয়েক হাজার ফুট উপর থেকে আসা ঝর্ণাধারা পর্যটকদের আকৃষ্ট করবেই। তাই প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক ছুটে আসেন প্রকৃতির কন্যা জাফলংয়ের সৌন্দর্য দেখতে ।
জাফলং এ কি কি পাওয়া যায় ।
প্রকৃতির কন্যা জাফলং বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ কেন্দ্র। এখানে বিচিত্র ধরনের জিনিস পাওয়া যায়। তার মধ্যে নুড়ি পাথর অন্যতম। বর্ষা মৌসুমে ভারতের সীমান্তবর্তী শিলং মালভূমিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হলে ডাউকি নদীর প্রবল স্রোতে বড় বড় শিলাখন্ড ভেসে আসে। সে কারণে জাফলংয়ে প্রচুর পাথর পাওয়া যায়। এ ছাড়াও জাফলংয়ে চীনামাটিও পাওয়া যায়।
জাফলং এ হোটেল ভাড়া কত ?
জাফলংয়ে থাকার জন্য কোন ভালো মানের হোটেল নেই। খুব জরুরী থাকার প্রয়োজন মনে হলে জৈন্তিয়া হিল রিসোর্টে থাকতে পারেন। এখানে মৌসুম ভেদে ভাড়ার পার্থক্য হয়ে থাকে। তাই ভাড়া মিটিয়ে উঠবেন।
জাফলং এ কিভাবে যাবেন ?
সিলেট শহর থেকে সরাসরি বাসে করে জাফলং যাওয়া যায়। সিলেট শহরের কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ছাড়ে প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে ৩০ মিনিট পর পর। এ ছাড়াও আপনী চাইলে সোবহানী ঘাট থেকেও বাসে উঠতে পারেন । বাস ভাড়া জনপ্রতি ১১০ টাকা। রিজার্ভ গাড়ীতে জাফলং যেতে চাইলে সিএনজি,লেগুনা,বা মাইক্রোবাস পাবেন শহরের বন্দর বাজারসহ যে কোন জায়গা থেকে। জাফলং যাওয়া- আসা সহ সারা দিনের জন্য সিএনজি ভাড়া লাগবে ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা।
জাফলং এর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি ?
জাফলং কথাটি শুনলেই মনের মধ্যে এক অনাবিল শিহোরণ জেগে উঠে। ঘুরে ঘুরে দেখতে ইচ্ছে করে জাফলংয়ের সবগুলো পর্যটনকেন্দ্র। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে এক সময় সবগুলো পর্যটনকেন্দ্র দেখা শেষ হয়। হৃদয়ের গভীর থেকে কেউ যেন বলছে ,"কেউ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান "। তারপর ও বলতে হয় জাফলংয়ের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হচ্ছে জাফলং জিরো পয়েন্ট।
জাফলং কোন নদীর তীরে অবস্থিত ?
বাংলাদেশের সিলেট জেলার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকায় জাফলং অবস্থিত। এর বিপরীত পার্শ্বে ভারতের ডাউকি অঞ্চল। ডাউকি অঞ্চলের সবুজে ঘেরা পাহাড় থেকে ডাউকি নদী বাংলাদেশর সিলেট জেলায় প্রবেশ করেছে। মূলকথা পিয়াইন নদীর অববাহিকায় পর্যটনকেন্দ্র জাফলং অবস্থিত।
জাফলং এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব বর্ণনা কর ।
ঐতিহাসিকদের মতে ,হাজার হাজার বছর ধরে প্রকৃতি কন্যা জাফলং খাসিয়া- জৈন্তা রাজার অধীন এক জনমানবহীন বনভূমি ছিল। ১৯৫৪ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে খাসিয়া-জৈন্তা রাজ্যের অবসান ঘটে। তারপর বেশ কয়েক বছর জাফলংয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা পতিত অবস্থায় পড়ে ছিল।
পরবর্তীতে পাথরের সন্ধানে ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌপথে জাফলং আসতে শুরু করেন। এক সময় পাথর ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকলে জাফলংয়ে গড়ে উঠতে থাকে নতুন নতুন জনবসতি। তাই এক কথায় বলা যায় জাফলংয়ের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ব্যাপক।
দারুণ সাহায্যকারি পোস্ট