ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
প্রিয় পাঠক,আপনারা ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর কখন, কিভাবে দেখতে যাবেন সেটা নিয়ে বেশ চিন্তিত। মোহনীয় রুপ লাবণ্যে ভরপুর প্রকৃতির এই লীলাভূমি। চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করব কখন,কিভাবে আপনারা ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর দেখতে যাবেন ।
প্রিয় আর্টিকেল পাঠক ,আপনাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমি ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর সম্পর্কে বেশ কিছু খুঁটিনাটিঁ বিষয়ে আলোচনা করেছি । বিস্তারিত জানতে আমার সাথেই থাকুন।
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর কোথায় অবস্থিত ?
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জে অবস্থিত। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাদদেশে সবুজ বনানিতে ঘেরা মায়ায় মোড়ানো সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চমৎকার একটি গ্রাম ভোলাগঞ্জ। এটি দেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারি অঞ্চল। সিলেটের ভোলাগঞ্জ সীমান্তে সুদৃশ্য মোহনীয় প্রাকৃতিক দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উঁচু উঁচু পাহাড়। রোপওয়ে,পাথর কোয়ারি, নদী আর সবুজে ঘেরা পাহাড়ে মিলে অসম্ভব রকমের সুন্দর এই ভোলাগঞ্জ।
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরের সৌন্দর্য দেখতে কখন যাবেন ?
বছরের সব সময়ই সাদা পাথরের দেশে ঘুরতে যেতে পারেন। তবে বর্ষার সময় এখানে প্রচুর পানি থাকে বলে এ স্থানের সৌন্দর্য দ্বিগুন বেড়ে যায়। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সবুজ পাহাড়, সেখান থেকে নেমে আসা বিরামহীন ঝর্ণা ধারা, পাথুরে নদী, সব মিলিয়ে প্রকৃতির এক অনন্য সুন্দর রুপের সৃষ্টি হয়। তাই এক কথায় বলা যায় যে, জুলাই মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এটি ভ্রমণের সব চেয়ে উপযুক্ত সময়।
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর কিভাবে যাবো ?
সিলেট শহর থেকে বিভিন্নভাবে ভোলাগঞ্জে যাওয়া যায়। সিএনজি করে যেতে হলে আপনাকে প্রথমে আসতে হবে সিলেট শহরের আম্বরখানা পয়েন্টে। আর বিআরটিসি, লোকাল ও টুরিস্ট বাসে করে যেতে হলে আপনাকে যেতে হবে সিলেট শহরের মজুমদারী এলাকায়। প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে ২০ মিনিট পরপর এ সব বাস পাওয়া যায়। জনপ্রতি ৭০ টাকা ভাড়ায় খুব সহজে ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্টে যেতে পারবেন।
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরের নৌকা ভাড়া কত ?
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরে যেতে হলে সর্ব প্রথম ভোলাগঞ্জ বাজারে নেমে ১০ নং নৌকা ঘাটে যেতে হবে। ঘাট থেকে সাদা পাথর যাওয়ার ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভাড়া করতে হবে। যাওয়া আসাসহ নৌকা ভাড়া ৮০০ টাকা। সাদা পাথর এলাকায় গিয়ে মনে চাইলে যতক্ষণ ইচ্ছা সময় কাটাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে মাঝির সাথে কথা বলে মাঝির ফোন নম্বর নিয়ে নিতে হবে। সাদা পাথরের উৎসমুখে সব সময় ভারতের চেরাপুঞ্জি থেকে ঠান্ডা স্বচ্ছ নীল পানি বিরামহীনভাবে নেমে আসে। যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর।
সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর কত কিলোমিটার ?
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরের সৌন্দর্য দেখলে আপনি ও অবাক হবেন
সিলেটের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর প্রকৃতির এক মোহনীয় অপরুপ রুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। সিলেট জেলার উত্তর -পূর্বাঞ্চলে সীমান্ত ঘেঁষা মেঘালয় রাজ্যের আকাশ ছোঁয়া পাহাড়ের পাদদেশে এর অবস্থান। প্রতিদিন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মনোরম এই লীলাভূমির নয়নাভিরাম ভূ-দৃশ্য উপভোগ করতে প্রকৃতি প্রেমিক হাজারো মানুষ বেড়াতে আসেন।
উঁচু পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা নীল জল আর সাদা পাথরের মেলবন্ধনই এখন সাদা পাথর হিসাবে খ্যাতি লাভ করেছে। সবুজ পাহাড় ,সাদা মেঘের হাতছানি আর বর্ষার পাহাড়ি ঢলের সাথে নেমে আসা সাদা পাথর ধলাই নদের বুকে মিলে মিশে সাদা পাথরের সৌন্দর্যকে আর ও বাড়িয়ে তুলেছে।
ভোলাগঞ্জের দর্শনীয় স্থানগুলো কি কি ?
ভোলাগঞ্জ বাংলাদেশের সিলেট জেলার অন্যতম একটি আর্ষনীয় পর্যটনকেন্দ্র । ভোলাগঞ্জের কাছেই উৎমাছড়া এবং তুরংছড়া নামে আরও দুটি দর্শনীয় পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। অনেকেই সাদা পাথর ভ্রমণ শেষে উৎমাছড়া এবং তুরংছড়ার মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে যান।
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরের ইতিহাস ?
ভোলাগঞ্জের ইতিহাস এখনও সে অঞ্চলের মানুষের কাছে কালের সাক্ষী হয়ে আছে। ভারতের তৎকালীন আসাম প্রদেশের মানুষ রাজধানী শিলংএ যাতায়াত করতেন এ রাস্তা দিয়েই । যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রজ্জু পথ। যা ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে নামে পরিচিত ।ভোলাগঞ্জ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারি ।
যতদূর চোখ যায় শুধু পাথর আর পাথর ,মাঝখানে বয়ে আসা স্বচ্ছ নীল পানি ,উপরে তুলোর মতো ভাসমান মেঘমালা ,নীল আকাশ আর সবুজ পাহাড় যেন পরস্পরকে আলিঙ্গন করে ঘুমিয়ে আছে । আর এ কারণেই সব সময়ই এখানে রয়েছে দেশী বিদেশী পর্যটকদের আনাগোনা ।
ভোলাগঞ্জে থাকার জন্য কি রিসোর্ট রয়েছে ?
এটি একটি প্রত্যন্ত গ্রামীণ মনোরম পর্যটন এলাকা। তাই এখানে রাত্রী যাপন করার মতো ভালো মানের কোন আবাসিক হোটেল নেই। খুব জরুরী প্রয়োজন হলে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা সদরে পাবেন হোটেল আল ছাদিক ,হালিমা বোর্ডিং, বাদশা বোর্ডিং, হোটেল আল হাসান ইত্যাদি। তাই রাতে থাকার জন্য সিলেট শহরে ফিরে আসাই উত্তম।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url