সর্ব রোগের মহাঔষধ মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

প্রিয় পাঠক, আপনারা সর্ব রোগের মহাঔষধ মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য বেশ উদ্বিগ্ন। মধু অত্যন্ত উপকারী একটি ভেষজ উপাদান। চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে সর্ব রোগের মহাঔষধ মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব।

সর্ব রোগের মহাঔষধ মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

প্রিয় আর্টিকেল পাঠক, আপনাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমি সর্ব রোগের মহাঔষধ মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করেছি। বিস্তারিত জানতে আমার সাথেই থাকুন।

মধু কি ? 

মধু হলো প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এক প্রকার মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ, যা মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস হতে তৈরি করে এবং মৌচাকে তা সংরক্ষণ করে। মধু উচ্চ ঔষধি গুনসম্পন্ন একটি ভেষজ তরল পদার্থ। সর্ব রোগের মহাঔষধ মধু খাওয়ার উপকারিতার কথা যেনে অনেকেই এটি নিয়মিত পান করে থাকেন।

মধুর পুষ্টিগুণ।

পুষ্টিগুণের বিবেচনায় মধুর কোন বিকল্প নেই। তাই মধুকে সর্ব রোগের মহাঔষুধ বলা হয়। নিয়মিত মধু পান করলে অনেক রোগ বালাই থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এটি বৈজ্ঞানিকভাবে বহুকাল আগে থেকেই প্রমাণিত।

মধুতে রয়েছে ৪৫ টিরও বেশি খাদ্য উপাদান,যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। মধুতে যে উপাদান গুলো রয়েছে সেগুলো হলো গ্লুকোজ ২৫ থেকে ৩৭ %, ফ্রক্টোজ ৩৪ থেকে ৪৩ %, সুক্রোজ ০.৫ থেকে ৩%, মাল্টোজ৫ থেকে১০%, এমাইনো এসিড ২২%, খনিজ লবণ ২৮%, এনজাইম ১২%। এ ছাড়াও ভিটামিন বি ১,২,৩,৫,৬, আয়োডিন, জিংক, কপার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল।

সর্ব রোগের মহাঔষধ মধু খাওয়ার উপকারিতা জানলে অবাক হবেন।

সর্ব রোগের মহাঔষধ মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। শীতে অনেকেরই মধু খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। মধু মানব দেহের জন্য দারুন এক উপকারী ভেষজ। যে কারণে মধুকে প্রকৃতির মিষ্টি অমৃত বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। নিম্নে সর্ব রোগের মহাঔষধ মধু খাওয়ার উপকারিতা কথা বলা হলোঃ

১। শক্তি যোগায়ঃ শরীরে শক্তি যোগানোর সবচেয়ে ভালো উপাদান হচ্ছে মধু। এটি শরীরে তাপ ও শক্তি যুগিয়ে শরীরকে সতেজ ও প্রাণবন্ত করে।

২। হজমে সহায়তা করেঃ মধুতে থাকা শর্করা সহজে হজম হয়। মধুতে যে ডেক্সাট্রেইন থাকে তা সরাসরি রক্তে প্রবেশ করে তাৎক্ষণিকভাবে হজম ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।

৩। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ মধুতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন সকালে এক চা চামচ খাঁটি মধু পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও অম্লতা দূর হয়।

৪। রক্তশূন্যতা দূর করেঃ মধুতে থাকা কপার, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ রক্তের হিমোগ্লোবিনের গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। যার ফলে রক্তশূন্যতা দূরীকরণে বিশেষ অবদান রাখে।

৫। ফুসফুসের যাবতীয় রোগ দূর করেঃ ফুসফুসের যাবতীয় রোগে মধু ভীষণ উপকারী। নিয়মিত মধুপান করলে অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্ট থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

৬। যৌন দুর্বলতাঃ বর্তমান সময়ে পুরুষদের যৌন দুর্বলতা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। পুরুষদের মধ্যে যাদের যৌন দুর্বলতা রয়েছে তারা যদি নিয়মিত মধু ও কাঁচা ছোলা একত্র করে খান তাহলে যৌন দুর্বলতা থেকে চিরতরে মুক্তি পাবেন।

৭। তাপ উৎপাদনঃ শরীরে তাপ উৎপাদনে মধুর কোন বিকল্প নেই। শীতকালে হালকা কুসুম গরম পানিতে মধু মিশ্রিত করে খেলে তাৎক্ষণিক শরীরে তাপ উৎপাদন হয়।

৮। দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়ঃ গাজরের সাথে মধু মিশিয়ে নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

৯। পানি শূন্যতা দূর করেঃ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের এক লিটার পানিতে ৫০ মিলিলিটার মধু মিশিয়ে খাওয়ালে শরীরে পানি শূন্যতা দূর হয়।

১০। রূপচর্চাঃ রূপচর্চায় মধুর কোন বিকল্প আজও আবিষ্কার হয় নাই। নিয়মিত মুখে মধু ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ, সুশ্রী, সুন্দর ও কোমল হয়।

যৌন দুর্বলতায় মধু খাওয়ার উপকারিতা।

যৌন দুর্বলতায় মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে মোটামুটি কম বেশি সবাই অবগত। যে সব পুরুষের যৌন দুর্বলতা রয়েছে মধু তাদের জন্য মহাঔষধের মতো কাজ করে। নিম্নে যৌন দুর্বলতায় মধু খাওয়ার উপকারিতার কথা বলা হলোঃ

* মধু টেস্টোস্টেরনের নিঃসরণ ও কার্যকারিতা বহু গুনে বৃদ্ধি করে।

* মধু শুক্রাণুর মান উন্নত ও বৃদ্ধি করে।

* মধু যৌনাঙ্গে রক্ত প্রবাহ বাড়াতে সহায়তা করে।

*মধু যৌন উদ্দীপনা বহু গুণ বাড়িয়ে দেয়।

* মধু নারী শরীরের যৌন হরমোন ইস্ট্রোজেন ক্ষরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

* মধু কাম উত্তেজনা বৃদ্ধিতে দারুণ ভূমিকা রাখে।

মধু খাওয়ার নিয়ম।

মধু একটি উত্তম পানীয়, যা বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।

* প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক থেকে দুই চা চামচ মধু পান করা সবচেয়ে উত্তম।

* রাতে মধু খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে।তবে সেটা অবশ্যই রাতের খাবারের দুই থেকে তিন ঘন্টা পর খেতে হবে।

* প্রতিদিন সকালে তিন চারটি রসুনের কোয়া কুচি করে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে শরীর ফুরফুরে থাকবে এবং কখনো ক্লান্তি ভাব আসবে না।

কালোজিরা ও মধুর উপকারিতা।

কালোজিরা ও মধু একসাথে খেলে উপকারিতা বহু গুনে বেড়ে যায়। কালোজিরা কে বলা হয় মৃত্যু ব্যতীত সর্ব রোগের মহাঔষধ। আর মধুর গুনাগুন কালোজিরার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। নিম্নে কালোজিরা ও মধু একসাথে খেলে যে উপকারগুলো পাওয়া যায় সেগুলো হলোঃ

*কালোজিরা ও মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

* বাত ব্যথার উপশম হয়।

* সর্দি কাশির উপশম করে।

* উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

* রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।

* হৃদরোগের ঝুকি কমায়।

* শ্বাস জানিত রোগের উপশম করে।

* যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে।

*কাম উত্তেজনা বাড়ায়।

* চেহারায় সতেজ ভাব ফুটে ওঠে।

মধুর অপকারিতা।

সর্ব রোগের মহাঔষধ মধু খাওয়ার উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। মহান আল্লাহর দেওয়া মধুর তেমন কোন অপকারিতা নেই। তারপরও অতিরিক্ত মধু পান করলে যে সমস্যাগুলো হতে পারে সেগুলো হলোঃ

* পাইলসে আক্রান্ত রোগীর ফোলা বেড়ে যেতে পারে।

* ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

* দাঁতের ব্যথা বাড়তে পারে ও মাড়ি ফুলে যেতে পারে।

* মুখ গহবরের ক্ষত বেড়ে যেতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪