আদার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখুন

প্রিয় পাঠক, আপনারা আদার উপকারিতা কি সেটা জানার জন্য বেশ চিন্তিত। আদা প্রাকৃতিক ভেষজ গুনে ভরপুর একটি উদ্ভিদ মূল। চিন্তার কোন কারণ, নেই আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে আদার উপকারিতা সম্পর্কে দেখানোর চেষ্টা করব ।

আদার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখুন

প্রিয় আর্টিকেল পাঠক, আপনাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমি আদার উপকারিতা সম্পর্কে বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করেছি। বিস্তারিত জানতে আমার সাথেই থাকুন।

আদা কি ?

আদা একটি উদ্ভিদ মূল। যা মানুষ খাবার তৈরিতে মসলা হিসাবে ব্যবহার করে। ভেষজ ওষুধ হিসাবে এটি আদিকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রান্নার কাজে ব্যবহৃত মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে আদা অন্যতম। আদা আমাদের দেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মসলা জাতীয় ফসল।

আদার পুষ্টিগুণ।

মহান আল্লাহ তাআলার অসংখ্য নেয়ামতের মধ্যে অন্যতম একটি নেয়ামত হচ্ছে আদা। পুষ্টি গুণে ভরপুর মহাঔষধ নামে খ্যাত আদায় রয়েছে অসম্ভব রকমের এক ভেষজ গুণ। নিত্য ব্যবহার্য আদায় রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ক্রোমিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক ও লবণ এর মত অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান। 

আদা  খাদ্য প্রস্তুত শিল্পে, পানীয় তৈরিতে, আচার, ঔষধ, সুগন্ধি এবং আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আদা কাঁচা ও শুকনো দু'রকম ভাবেই খাওয়া যায়। তবে কাঁচা আদায় পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। অনেকে আবার আদার সাথে মধু মিশিয়ে চিবিয়ে খেতে পছন্দ করেন। আদায় অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান বিদ্যমান থাকায় শরীরের রোগ জীবাণুকে ধ্বংস করে, শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখে।

আদার ওষুধি গুণ।

আদার ওষুধি গুনাগুন সম্পর্কে আমরা প্রায় সকলেই কম-বেশি জানি। তাই এটি সুপার ফুডের অন্তর্ভুক্ত একটি মসলা। আদায় ফাইবার, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিকসহ নানা প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে। যা মানব দেহের জন্য ভীষণ উপকারী। নিম্নে আদার উপকারিতা বা ঔষধি গুণের কথা বলা হলোঃ

আদা জ্বর ও ঠান্ডা লাগা কমায়।

আদা ব্যথা নিরাময়কারক।

আদা অতিরিক্ত ওজন কমায়।

আদার রস বসন্ত রোগ নিরাময়কারক।

আদার রস শরীর শীতল করে।

 আদা হৃদরোগের উপশম করে।

আদা সর্দি-কাশি ও হাঁপানি রোগের জন্য উপকারী।

আদা কখন খাওয়া ভালো।

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আদা চিবিয়ে খাওয়া সবচেয়ে উত্তম। এতে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং রক্তচাপ থাকে স্বাভাবিক। আবার আদা খেলে হৃদরোগের ঝুঁকিও কম থাকে। এছাড়াও গ্যাস, পেট ফাঁপা, বদহজম এবং অম্বলের মতো সমস্যার সমাধানে আদার উপকারিতা ব্যাপক  ।

 আদার উপকারিতা জেনে রাখা ভালো 

গুরুজনে বলে, আদা সকল রোগ নিরাময়ের দাদা। যার সারমর্ম হচ্ছে আদা শরীরের সব রোগ নিরাময় করতে সক্ষম। আদায় এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান বিদ্যমান থাকায় যে কোনো রোগ প্রতিরোধে সক্ষম। যার কারণে সব বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন। সুস্থ দেহ এবং সতেজ মনের জন্য আদার উপকারিতা অবর্ণনীয় । নিম্নে কাঁচা আদার উপকারিতার কথা বলা হলোঃ        

১। গ্যাসের সমস্যা দূর করেঃ

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাঁচা আদা লবণ মিশ্রিত করে চিবিয়ে খেলে গ্যাসের সমস্যার সমাধান হয়। এছাড়াও যারা আমাশয়, পেট ফাঁপা এবং বদ হজমের সমস্যায় ভোগেন তারা এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ আদার রস, এক চা চামচ লেবুর রস এবং এক চা চামচ মধু মিশে পান করলে ব্যাপক উপকার পাবেন।

২। শ্বাসকষ্ট হাঁপানি এবং ফুসফুসের সংক্রমণ কমায়ঃ

শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি এবং ফুসফুসের সংক্রমণ জনিত সমস্যা থাকলে প্রতিদিন দুই বেলা এক কাপ গরম পানি, এক চা চামচ আদার রস, এক চা চামচ লেবুর রস এবং এক চা চামচ খাঁটি মধু মিশ্রিত করে চায়ের মত পান করলে এবং সব ধরনের ঠান্ডা জনিত খাবার এড়িয়ে চললে ব্যাপক উপকার পাবেন।

৩। সব ধরনের বাত ব্যথা উপশম করেঃ

এ ধরনের রোগের অন্যতম কারণ হচ্ছে শরীরের অতিরিক্ত ওজন। তাই শরীরের ওজন ঠিক রেখে, প্রতিদিন দুইবার এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ আদার রস, এক চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে বাত ব্যাথা থেকে পরিত্রাণ পাবেন।

৪। সর্দি কাশি দূর করেঃ

প্রতিদিন খালি পেটে আদা দিনে দুই থেকে তিন বার চিবিয়ে খেলে সর্দি কাশি দূর হয়।

৫। পাকস্থলী ও লিভারের শক্তি বর্ধকঃ

সমপরিমাণ আদা ও আমলকির গুড়া মধুর সাথে মিশ্রিত করে প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার খেলে ব্যাপক উপকার পাবেন।

৬। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করেঃ

 এক কাপ গরম পানির সাথে এক চা চামচ আদার রস এবং এক চা চামচ মধু মিশ্রিত করে খেতে হবে। তাহলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

আদা খাওয়ার নিয়ম।

আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা আদার বহুবিধ গুনাগুনের কথা বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন। তাদের মতে, কাঁচা আদা খাওয়া যেমন উপকারী তার চেয়ে বেশি উপকারী এক গ্লাস পানিতে রাত্রে কয়েক কুঁচি আদা ফেলে দিয়ে সকালবেলা খালি পেটে খেয়ে নিতে হবে। এতে করে বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকা যাবে।

পুরুষদের জন্য আদার উপকারিতা।

আদা বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি পুরুষদের ফার্টিলিটি বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ কমানো ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।  গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, পুরুষদের ফার্টিলিটি বাড়াতে আদার কোন বিকল্প নেই। এছাড়াও আদা পুরুষদের শরীরে শুক্রাণু বৃদ্ধি করে যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

আদা খেলে কি হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় ?

আদা একটি অত্যন্ত সুপরিচিত প্রাকৃতিক মসলা। এটি খাবার তৈরীর একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। মুখের রুচি বাড়াতে, বদহজম প্রতিরোধে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধিতে আদার কোন জুড়ি নেই। তাই এক কথায় বলা যায়, আদা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪