পেটের গ্যাস থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

প্রিয় পাঠক, আপনারা পেটের গ্যাসের সমস্যা কিভাবে কমাবেন সেটা নিয়ে বেশ চিন্তিত। পাকস্থলীর একটি নিত্য দিনের সমস্যা হচ্ছে পেটের গ্যাস। চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করব কিভাবে পেটের গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

পেটের গ্যাস থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

প্রিয় আর্টিকেল পাঠক, আপনাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমি পেটের গ্যাসের সমস্যা সম্পর্কে বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয় আলোচনা করেছি। বিস্তারিত জানতে আমার সাথেই থাকুন। 

পেটে গ্যাস কেন হয় ?

মানব দেহের পাকস্থলীর গ্যাস্ট্রিক গ্লান্ডে অতিরিক্ত এসিড নিঃসরণের ফলে গ্যাসের সমস্যা হয়। সাধারণত অনেক সময় ধরে খালি পেটে থাকলে, অতিরিক্ত চা, কফি, মদ্যপান, দুশ্চিন্তা, ধূমপান, নিদ্রাহীনতা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে পেটে গ্যাস হতে পারে। আর এই গ্যাসের জন্যই পেট ফুলে ওঠে, ঢেঁকুর ওঠে, বুক জ্বালাপোড়া করে এবং পায়খানা পুরোপুরি ক্লিয়ার হয় না।

পেটে গ্যাসের লক্ষণগুলি কি কি ?

পেটে গ্যাসের সমস্যা নতুন কিছু নয়। যে কোনো সময় এই সমস্যা হতে পারে। তবে পেটে গ্যাসের সমস্যা হলে যে লক্ষণগুলো দেখা যায়। সেগুলো হলোঃ

বমি বমি ভাব হওয়া।

পেট ফুলে ওঠা।

বুক জ্বালাপোড়া করা।

বদহজম।

পায়খানা না হওয়া।

পেট ব্যথা করা।

ঢেঁকুর ওঠা।

ক্ষুধামন্দা ভাব হওয়া।

পেটের গ্যাসের কারণগুলো কি কি ?

গ্যাসের সমস্যা একটি পাকস্থলী গত শারীরিক সমস্যা। এ সমস্যা অনেক সময় অবহেলার কারণে প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। কিছু শারীরিক অনিয়মের কারণে সাধারণত এই সমস্যা হয়ে থাকে। কারণগুলো হলোঃ

পছন্দনীয় খাবার।

অনিয়মিত খাদ্যাভাস।

মানসিক চাপ।

 চর্বিযুক্ত খাবার।

মসলাদার খাবার।

কোমল পানীয় ইত্যাদি।

পেটে অতিরিক্ত গ্যাস কেন হয় ?

পেটে গ্যাসের সমস্যা নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। কম -বেশি সবারই কিছু না কিছু গ্যাসের সমস্যা আছে। তবে পেটে সবচাইতে গ্যাস বেশি হয় দুধ জাতীয় খাবারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স। এছাড়াও বিনস, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপি এসব খাবারেও পেটে গ্যাস বেশি হয়ে থাকে। বিশেষত খাবার থেকেই এই সমস্যা বেশি হয় এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

পেটের গ্যাস কমানোর খাবার।

পেটের গ্যাস কমাতে খাবারের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। নিম্নলিখিত খাবারগুলি নিয়মমতো খেলে গ্যাস কমতে বাধ্য।

কলাঃ কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে। যা গ্যাস কমাতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়ার অভ্যাস করুন।

ডাবের পানিঃ ডাবের পানি খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা দূর হয়। কেননা এতে প্রচুর পরিমাণে মিনারেলস এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।

দইঃ দই খাবার হজমে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই গ্যাস কমাতে টক দই দারুন কাজ  করে

থাকে।

রসুনঃ প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে এক কোয়া কাঁচা রসুন খান। দেখবেন আপনার গ্যাসের সমস্যা চলে যাবে। কেননা এটি পাচনক্রিয়ায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে।

দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায়।

দ্রুত পেটের গ্যাস কমাতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো দারুন কাজ করে।

পেটে ম্যাসাজ করাঃ গ্যাস কমাতে পেটের উপরিভাগে ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। এতে গ্যাস নিচের দিকে চলে আসবে এবং মলদ্বারের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যাবে। এজন্য ডান হাতটিকে পেটের ওপর গোলভাবে ম্যাসাজ করুন। এতে আপনার গ্যাসের সমস্যা চলে যাবে।

গরম পানিতে গোসল করাঃ পেটের সমস্যার সমাধানে গরম পানিতে গোসল করা দারুন কার্যকর। গরম পানি পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও গরম পানি অন্ত্রের ওপর চাপ কমায় এবং অন্ত্র ভালো থাকে।

আশঁযুক্ত খাবার খাওয়াঃ পেটের সমস্যার সমাধানে আঁশযুক্ত খাবারের কোন বিকল্প নেই। মহিলাদের দিনে ২৫ গ্রাম এবং ছেলেদের ৩৮ গ্রাম ফাইবার খাওয়া উচিত। ফলমূল ও সবজিতে এই ফাইবার বেশি থাকে। তাই প্রতিদিন বেশি করে ফল ও সবজি খান।

 পর্যাপ্ত পানি পান করাঃ পেটে গ্যাসের সমস্যায় পর্যাপ্ত পানি পান করা সকলের জন্য অপরিহার্য। পর্যাপ্ত পানি পেটের বর্জ্য পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।

কলা খাওয়াঃ কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। তাই প্রতিদিন কলা খান।দেখবেন আপনার গ্যাসের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

নিয়মিত হাঁটা ও চলাফেরা করাঃ নিয়মিত হাঁটাও চলাফেরা করা গ্যাসের সমস্যার সমাধানে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। এর ফলে অন্ত্র খুব ভালোভাবে কাজ করে।

ডাবের পানি পান করাঃ ডাবের পানি গ্যাসের সমস্যা সমাধানে মহাঔষধের মতো কাজ করে। কেননা এতে প্রচুর পরিমাণে মিনারেলস ও এন্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান থাকে।

লবণ মিশ্রিত করে আদা চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়াঃ লবণ মিশ্রিত করে আদা চিবিয়ে চিবিয়ে খেলে গ্যাসের সমস্যা দ্রুত কমে যাবে। কেননা এতে হজম শক্তি ব্যাপক বেড়ে যাবে। যা গ্যাসের সমস্যার সমাধানে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে।

পেটের গ্যাস কমানোর চিকিৎসা।

পেটের গ্যাস কমানোর বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা রয়েছে। তবে পেটে গ্যাসের ব্যথা, বুক জ্বালাপোড়া করা, এবং বদহজমের জন্য ব্যাপক ব্যবহৃত জনপ্রিয় একটি ওষুধের নাম হচ্ছে ওমিপ্রাজল গ্রুপের ঔষধ। মানবদেহের আলসারের চিকিৎসায় এবং আলসার প্রতিরোধে ওমিপ্রাজল গ্রুপের ওষুধ সেবন করা হয়।

 এটি প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর গ্রুপের একটি বহুল পরিচিত ওষুধ। প্রতিদিন সকাল ও রাতে খাবার আধা ঘন্টা পূর্বে একটি করে খাবেন। এতে ব্যাপক উপকার পাবেন। এর সাথে ডমপেরিডোন গ্রুপের ঔষধ একটি করে খেলে গ্যাসের সমস্যা দ্রুত চলে যাবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪