মেদ কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
প্রিয় পাঠক, আপনারা মেদ বা চর্বি কিভাবে কমাবেন সেটা নিয়ে বেশ চিন্তিত। মেদ বা চর্বি শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করব কিভাবে আপনারা মেদ বা চর্বি কমাবেন।
প্রিয় আর্টিকেল পাঠক, আপনাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমি মেদ বা চর্বি সম্পর্কে বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করেছি। বিস্তারিত জানতে আমার সাথেই থাকুন।
মেদ কি ?
প্রাণীর শরীরের চামড়ার নিচে সঞ্চিত চর্বিকে মেদ বলে। অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি ওজন বাড়ার মূল কারণ। আর এই অতিরিক্ত ওজন মানুষের সৌন্দর্য বিনষ্ট করে।
মেদ কমানোর ব্যায়াম।
পেটের অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি একটি অস্বস্তিকর বিষয়। সঠিক নিয়মে প্রতিদিন ব্যায়াম করতে পারলে পেটের মেদ বা চর্বি কমানো সম্ভব। পেটের চর্বি কমানোর জন্য খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। মিষ্টি ও উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। যেমনঃ কোমল পানীয়, চিনিযুক্ত খাবার, কেক, চকলেট ইত্যাদি
পাশাপাশি আমিষ জাতীয় খাবার শাঁকসবজি ও মৌসুমি তাজা ফলমূল খেতে হবে। নিয়মিত হাঁটতে হবে এবং দৈহিক পরিশ্রম বাড়াতে হবে। এছাড়াও পেটের মেদ কমানোর নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। যা আপনার ব্যাপক উপকারে আসবে।
পেটের ব্যায়ামঃ
বিস্ক ওয়াকিংঃ প্রথমে ধীরে ধীরে এক মিনিট হাঁটুন। তারপর জোরে জোরে ৩০ সেকেন্ড হাঁটুন। আবার ধীরে ধীরে এক মিনিট হাঁটুন এবং জোরে জোরে৩০ সেকেন্ড হাঁটুন। এভাবে প্রতিদিন পাঁচ থেকে দশ মিনিট ব্যায়াম করুন উপকার পাবেন।
জগিংঃ প্রথমে এক মিনিট জগিং করুন তারপর ৩০ সেকেন্ড দৌড়ান। আবার এক মিনিট জগিং করুন এবং ৩০ সেকেন্ড দৌড়ান। এভাবে প্রতিদিন পাঁচ থেকে দশ মিনিট ব্যায়াম করুন। উপকৃত হবেন।
ক্রাঞ্চঃ মাদুরের উপর চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার হাঁটু ভাঁজ করে বুকের কাছে নিয়ে আসুন। আবার একই সাথে মাথার পিছনে হাত দিয়ে শরীর উঠিয়ে হাঁটুর কাছে নিয়ে আসুন। এবার হাঁটু মাথা একসাথে আনার সময় শ্বাস নেবেন এবং আগের অবস্থানে ফিরে যাওয়ার সময় ছেড়ে দিবেন। এভাবে প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ বার করুন। আপনার মেদ কমতে বাধ্য।
ফ্লাটার কিকঃ মাদুরের উপর চিত হয়ে শুয়ে হাত দুটো হিপের নিচে রাখুন। এবার মাথা কাধ ও পা মাদুর থেকে উপরে উঠান। এমতবস্থায় পা দুটো উঠানামা করান। ৫ থেকে ১০ বার উপকার পাবেন।
পেটের স্ট্রেচিংঃ প্রথমে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার দুই হাত সোজা করে মাথার পিছনে নিয়ে যান। এবার পায়ের পাতা টানটান করে পায়ের বুড়ো আঙ্গুল ছুঁতে চেষ্টা করুন। এর মাধ্যমে পেটে টান অনুভব করবেন। এভাবে পাঁচ থেকে দশ মিনিট ব্যায়াম করুন। আপনার পেটের মেদ কমে যাবে।
লেবু দিয়ে মেদ কমানোর উপায়।
মেদ কমাতে একটি বহুল প্রচলিত পদ্ধতি খালিপেটে লেবু পানি পান করা। লেবু মিশ্রিত পানি স্বাদে- গুনে এবং শরবত হিসাবে চমৎকার। এটি পাকস্থলীর বর্জ্য পদার্থ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন খালি পেটে সকালে লেবু পানি পান করতে পারেন। প্রচলিত ধারণা মতে, খালি পেটে লেবু জল পান করলেই কমে যাবে আপনার শরীরের মেদ বা চর্বি। মূলত লেবুর মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। এই ভিটামিন সি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দিয়ে মেদ বা চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায়।
অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মেদ বা চর্বিযুক্ত শরীর সাধারণত সুশ্রী বা সুন্দর দেখায় না। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে মেদ বা চর্বিযুক্ত শরীর একেবারেই বেমানান। তাই মেয়েদের পেটের চর্বি কমাতে নিচের উপায় গুলো অবলম্বন করুনঃ
১। ভালো করে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন।
২। তিন বেলা পরিমিত আহার করুন।
৩। বড় প্লেটের পরিবর্তে ছোট প্লেটে খাবার খান।
৪। সৌজন্যতাবোধ বজায় রাখতে বেশি খাবার খাবেন না।
৫। নিয়মিত ঘুমের অভ্যাস করুন।
৬। সাদা চাল, সাদা আটার বিকল্প ব্যবহার করুন।
৭। ফ্যাট ফ্রি খাবার গ্রহণ করুন।
এই বিষয়গুলো মেনে চললে আপনার পেটের মেদ বা চর্বি কমে যাবে।
ছেলেদের বুকের চর্বি কিভাবে কমানো যায়।
মেদ বা চর্বিযুক্ত শরীর মোটেই সুবিধাজনক নয়। তাই মেদ বা চর্বি যে কোন মূল্যে শরীর থেকে দূর করতেই হবে। শরীরের মেদ কমানোর জন্য নিম্ন লিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। যেমনঃ
১। মিষ্টি ,তেল. চিনি জাতীয় খাবার বন্ধ করে দিন এবং অল্প তেল দিয়ে রান্না করা খাবার খান।
২। প্রতিদিন সকালে হালকা কুসুম গরম পানিতে অর্ধেকটা লেবু চিপে নিয়ে পান করুন। দেখবেন এটি আপনার দেহের এবং বুকের চর্বি কমাতে দারুন কাজ করে।
৩। প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটার এবং নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
এই নিয়মগুলো সঠিকভাবে পালন করলে আপনার শরীর থেকে মেদ বা চর্বি কমতে বাধ্য।
বুকের চর্বি কমানোর ঔষধ।
শরীরের মেদ বা চর্বি একটি বিব্রতকর ও সৌন্দর্য হানিকর বিষয়। শরীরে একবার মেদ বা চর্বি জমে গেলে তা আর সহজে দূর করা যায় না। এই সমস্যা দূর করার জন্য বাজারে কিছু ওষুধ পাওয়া যায়। তবে সেগুলো অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত খাওয়া উচিত নয়। বাজারে প্রাপ্ত ঔষধ ও পানীয়গুলো হলোঃ
গ্রিন টি।
হাল্যাক্স ট্যাবলেট।
ফাইটোলাকা বেরি ট্যাবলেট।
ইন্ডিয়ান স্লিম ফাস্ট।
জিরোফ্যাট 120 ইত্যাদি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url