কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখুন


প্রিয় পাঠক, আপনারা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানার জন্য বেশ চিন্তিত। কোষ্ঠকাঠিন্য অস্বস্তিকর এবং বিব্রতকর একটি রোগ। চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব।

কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখুন

প্রিয় আর্টিকেল পাঠক, আপনাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করেছি। বিস্তারিত জানতে আমার সাথেই থাকুন।

কোষ্ঠকাঠিন্য কি ? 

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি অস্বস্তিকর শারীরিক অবস্থা। এমতবস্থায় একজন মানুষ সহজে মলত্যাগ করতে পারে না। সাধারণত এক থেকে দুই দিন পর পর মলত্যাগের বেগ হওয়া, শুষ্ক ও শক্ত মলত্যাগ কোষ্ঠকাঠিন্য বলে অধিক পরিচিত। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, পর্যাপ্ত আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার পরও যদি প্রতি সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ হয়, তখন তাকে কোষ্টকাঠিন্য বলে।

কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয় ?

 কোষ্ঠকাঠিন্য একটি অস্বস্তিকর শারীরিক অবস্থা। এমতবস্থায় একজন মানুষ সহজে মলত্যাগ করতে পারে না। পুষ্টিবিদদের মতে, আমরা যা খাই তা অন্ত্রে একটি মাইক্রোবায়োম তৈরি করে খাদ্য হজম ও পুষ্টি উপাদান শোষণ করে। পুষ্টিবিদরা আরও বলেছেন যে, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস উদ্ভিজ্জ খাদ্য গ্রহণ সীমিত করে। ফলে দেখা দেয় কোষ্ঠকাঠিন্য।

 সাধারণত এক থেকে দুই দিন পর পর মলত্যাগের বেগ হওয়া, শুষ্ক ও শক্ত মলত্যাগ কোষ্ঠকাঠিন্য বলে অধিক পরিচিত। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, পর্যাপ্ত খাবার খাওয়ার পর যদি প্রতি সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ হয়ে থাকে তখন তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে। খাদ্য তালিকায় আঁশ জাতীয় খাবার গ্রহণ না করা এবং পর্যাপ্ত পানি পান না করার ফলে কোষ্টকাঠিন্য হতে পারে। অনেক সময় টিউমার এবং খাদ্যনালির সমস্যার কারণে ও পায়খানা বন্ধ বা অনিয়মিত হতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের লক্ষণ বা উপসর্গগুলি কি কি ?

কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় যে, লক্ষণগুলো সাধারণত দেখা যায় সেগুলো হলঃ শুষ্কমল, শক্তমল, কঠিন মল, বেশি সময় নিয়ে মলত্যাগ করা, মলত্যাগের জন্য বেশি চাপ দেওয়া, বেশি সময় ধরে মলত্যাগ করার পরও অসম্পূর্ণ মলত্যাগ করা, তলপেটে ব্যথা অনুভব করা, মলত্যাগে অত্যন্ত কষ্ট হওয়া এবং আঙ্গুল বা সাপোজিটরি ব্যবহার করে মলত্যাগ করা।

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কি কি সমস্যা হয় ?

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি বিব্রতকর শারীরিক সমস্যা। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সাধারণত যে সমস্যাগুলো দেখা দেয় সেগুলো হলঃ ক্ষুধামন্দা, অরুচি, রক্তস্বল্পতা, অবসাদ বা ক্লান্তি, ঘুম কম হওয়া, চোখের নিচে কালো দাগ পড়া, মাজা ব্যথা করা, অলসতা বৃদ্ধি পাওয়া এবং মনোযোগ হ্রাস পাওয়া।

কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে কিছু ঘরোয়া টিপস ।

কোষ্ঠকাঠিন্য দৈনিন্দন জীবনের একটি অন্যতম সমস্যা। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে অনেকগুলো ঘরোয়া পরামর্শ নিম্নে দেওয়া  হলোঃ

কলাঃ

কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার মহাঔষধ। কলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় হিসাবে দারুন কাজ করে। কলাতে থাকা পটাশিয়াম বৃহদান্ত এবং ক্ষুদ্রান্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে হজম শক্তিকে শক্তিশালী করে। তাই প্রতিদিন কলা খাওয়ার অভ্যাস করুন।

কলমি শাকঃ

কলমি শাঁক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ব্যাপক সাহায্য করে। কলমি শাঁকের পাতা ও কাণ্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশ রয়েছে যা হজম,পরিপাক ও বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে কলমি শাঁক খাওয়ার অভ্যাস করুন। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে আপনাকে আর ভাবতে হবেনা।  

পর্যাপ্ত পানিঃ

ফাইবার যুক্ত খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তাদের প্রতিদিন অন্তত ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য সহজেই দূর হবে।

বেলের শরবতঃ

বেলে পর্যাপ্ত রেচক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় হিসাবে কাজ করে।  প্রতিদিন রাতের খাবারের আধা ঘন্টা আগে এক গ্লাস বেলের শরবত পান করুন। দেখবেন আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হবে।

কমলাঃ

কমলা নিয়মিত খেলে মল নরম করে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ভূমিকা রাখে।

লেবুর রসঃ

লেবুর রস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে অর্ধেক লেবুর রস দিয়ে খালি পেটে পান করুন। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য চলে যাবে।

ইসবগুলের ভুষিঃ

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে যে জিনিসগুলো সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে সেগুলোর মধ্যে ইসবগুলের ভুষি একটি চমৎকার ঘরোয়া মহাঔষধ। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে যা পানি শোষণ ও ধারণ করে পায়খানা নরম করে। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় হিসাবে দারুণ কাজ করে। ইসবগুলের ভুসি পাঁচ মিনিট ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে এবং রাত্রে খাবার আধা ঘন্টা পূর্বে প্রতিদিন পান করুন। এতে খুব তাড়াতাড়ি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য চিরতরে চলে যাবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঔষধ ?

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরী ঔষধ হচ্ছে মিল্ক অব ম্যাগনেশিয়া বা অ্যাভোলাক সিরাপ। প্রতিদিন তিনবেলা খাবার পর তিন চা চামচ করে সেবন করুন। দেখবেন আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হবে।

কোষ্টকাঠিন্য দূর করার ট্যাবলেট।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেট বাজারে প্রচলিত আছে। যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে যথেষ্ট সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ট্যাবলেটগুলি হলঃ ডুরালাক্স ,ডুলকোলাক্স ল্যাকটুলোজ, বিসাকোডিল ও সেনা ট্যাবলেট ইত্যাদি।

কোন কোন খাবারে কোষ্ঠকাঠিন্য সবচেয়ে বেশি হয় ?

তৈলাক্ত ভাঁজাপোড়া খাবারে কোষ্ঠকাঠিন্য সবচেয়ে বেশি হয়। তবে কোষ্ঠকাঠিন্য হলে যে খাবারগুলো খাওয়া একেবারে উচিত নয়, সেগুলো হলঃ সব ধরনের ফাস্টফুড, রেডমিট, অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত খাবার ইত্যাদি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪