শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখুন
প্রিয় পাঠক, আপনারা শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ সম্পর্কে জানার জন্য বেশ চিন্তিত। বিভিন্ন কারণে এই শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করব, কিভাবে আপনারা শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ থেকে মুক্তি পারেন।
শ্বাসকষ্ট কাকে বলে ?
শ্বাসকষ্টের প্রধান কারণগুলো কি কি ?
উদ্বেগ বা প্যানিক অ্যাটাক।
শাসনালীতে ও শ্বাসনালীর দুটি শাখাতে অক্সিজেন সরবরাহের সমস্যা।
এলার্জি।
রক্তস্বল্পতা।
শারীরিক অযোগ্যতা।
নিউমোনিয়া ও হাঁপানির সমস্যা।
হৃদরোগ বা হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়া।
শ্বাসকষ্ট রোগের লক্ষণ বা উপসর্গগুলো কি কি ?
বুকের মধ্যে শো শো শব্দ হওয়া।
বুকে চাপ অনুভব করা।
দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া।
উচ্চ হৃদ স্পন্দনের হার বা বুক ধড়ফড় করা।
জোর করে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা।
শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কঠোর পরিশ্রম করা।
বুকে ব্যথা অনুভব করা।
শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ শহরে বেশি হয় কেন ?
শহর অঞ্চল ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। আবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যেখানে নগরায়ন প্রক্রিয়া চলছে সেখানে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এছাড়াও বায়ু দূষণের কারণে মানুষের শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
শহর অঞ্চলে শিল্প কলকারখানার ধোঁয়ার কারণেও বায়ু দূষিত হয় এবং সেই বায়ু শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে শরীরে প্রবেশ করলে মানুষের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। আবার শিল্প কলকারখানার বর্জ্য পদার্থের কারণে ও বায়ু দূষিত হয় এবং মানুষ শ্বাসকষ্ট জনিত নানান রোগে ভোগে। তাই শহর অঞ্চলে শ্বাস কষ্ট জনিত রোগ সবচাইতে বেশি দেখা যায়।
শ্বাসকষ্ট দূর করার সাতটি ঘরোয়া উপায় ?
ডিসপ্নিয়া বা শ্বাসকষ্ট হচ্ছে অস্বাভাবিক একটি শারীরিক অনুভূতি যা খুবই কষ্টকর। এটি সাময়িক বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তবে শ্বাসকষ্ট দীর্ঘস্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। নিম্নলিখিত কয়েকটি সহজ ঘরোয়া উপায়ে শ্বাসকষ্ট অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
কফিতে ক্যাফেইন রয়েছে, যা শ্বাসনালীতে উপস্থিত পেশীগুলোকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সহযোগিতা করে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করতে সহযোগিতা করে।
২। আদাঃ
আদা চা পান করলে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ দূর হয়। আদা ভেষজটিতে এন্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
শ্বাসকষ্টের এই সহজ কৌশলটি আপনাকে সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে। এর ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি ধীর করতে পারে এবং আপনাকে আরামদায়ক শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে পারে অর্থাৎ নাক দিয়ে আস্তে আস্তে নিঃশ্বাস নিন এবং ফুসফুসের পরিবর্তে পেটটি বাতাসে পরিপূর্ণ করুন ও মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস ফেলুন। এতে আপনি আরাম অনুভব করবেন।
৪। ভাপ নেয়াঃ
ঠান্ডা জনিত কারণে যদি শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনার ফুসফুসে শ্লেষ্মার সমস্যা হয়েছে। তাই ফুসফুসের শ্লেষ্মা দূর করতে এবং শ্বাসনালী পরিষ্কার করতে গরম পানির ভাপ নিলে উপকার পাবেন।
শীতল হাওয়া শ্বাসকষ্ট দূরীকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। কখনো কখনো শ্বাস নিতে অসুবিধা হলে ফ্যানের কাছে বসুন সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
৬। রসুনঃ
হাফ কাপ দুধে পরিমাণ মতো রসুন মিশিয়ে ভালো করে ফোটাতে হবে। তারপর কুসুম কুসুম গরম দুধটা পান করুন। এইটা পান করলে শ্বাসকষ্ট কমতে শুরু করবে। রসুন ফুসফুসের সংক্রমণ সারাতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
শ্বাসকষ্ট জনিত রোগের চিকিৎসায় মধুর কোন বিকল্প নেই। এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে রোগ নিরাময়ের যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে। প্রতিদিন এক গ্লাস গরম জলে মধু মিশিয়ে খেলে ব্যাপক উপকার পাবেন।
শ্বাসকষ্ট জনিত রোগের চিকিৎসা ?
শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ এর প্রথম ও প্রধান চিকিৎসা হচ্ছে ইনহেলার ব্যবহর। শ্বাসকষ্ট রোগের তাৎক্ষণিক উপশমের জন্য কয়েক ধরনের ঔষধ ইনহেলারের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়। যেমনঃ সালবুটামল, সালমেটেরোল এবং ফোরমোটেরোল ইত্যাদি। এছাড়াও সংক্রমণ বেশি হলে স্টেরয়েড ইনহেলার ব্যবহার করা হয়।
শ্বাসকষ্ট জনিত রোগের প্রতিকার।
শ্বাসকষ্ট একটি প্রতিরোধযোগ্য সমস্যা। বিভিন্ন কারণে শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। তবে নিম্নলিখিত ঘরোয়া প্রতিকারগুলো গ্রহণ করলে শ্বাসকষ্ট থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যেমনঃ কফি পান করা, ধূমপান পরিত্যাগ করা, তামাকজাত দ্রব্য পরিহার করা, ধুলাবালি থেকে দূরে থাকা, মশার কয়েলের ধোঁয়া ও রাসায়নিক বাষ্প থেকে দূরে থাকা, গরুর মাংস, চিংড়ি মাছ ও বেগুন ইত্যাদি খাবার না খাওয়া, ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করা।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url