গারো পাহাড় সম্পর্কে জেনে রাখুন অজানা সব তথ্য

প্রিয় পাঠক ,আপনারা গারো পাহাড় কখন ,কিভাবে দেখতে যাবেন সেটা নিয়ে বেশ চিন্তিত। মোহমায়ায় ভরপুর ময়মনসিংহের এই পাহাড়। চিন্তার কোন কারণ নেই, আমি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করব কখন ,কিভাবে আপনারা গারো পাহাড় দেখতে যাবেন।

গারো পাহাড় সম্পর্কে জেনে রাখুন অজানা সব তথ্য

প্রিয় আর্টিকেল পাঠক,আপনাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমি গারো পাহাড় সম্পর্কে বেশ কিছু খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করেছি। বিস্তারিত জানতে আমার সাথেই থাকুন।

গারো পাহাড় কোথায় অবস্থিত ? 

এই পাহাড় বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উত্তর -পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এবং পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত লম্বা একটি পর্বত শ্রেণী। এটি ভারতের সীমান্তর্তী মেঘালয় রাজ্যের গারো-খাসিয়া পর্বতমালার বর্ধিত অংশ। গারো পাহাড় ভারতের আসাম রাজ্য এবং বাংলাদেশের শেরপুর ও ময়মনসিংহ জেলায় অবস্থিত। তবে এর কিছু অংশ সুনামগঞ্জ ও জামালপুর জেলায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের সব থেকে বড় পাহাড়।

গারো পাহাড়ের উচ্চতা কত ? 

গারো পাহাড়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম নকরেক। তবে এটি ভারতীয় অংশে অবস্থিত। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে এই পাহাড়ের উচ্চতা ৪৬৫২ ফুট ।

গারো পাহাড় কিভাবে যাবো ? 

বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলার ভারতের কোল ঘেঁষে নয়নাভিরাম এই পহাড়। ভ্রমণপিপাসুগণ বাংলাদেশের যে কোন জায়গা থেকে গারো পাহাড়ে যেতে চাইলে সর্ব প্রথম ময়মনসিংহ শহরের ব্রীজ মোড় বাস স্ট্যান্ডে আসতে হবে। সেখান থেকে হালুয়াঘাট বাস স্ট্যান্ডে যেতে হবে। তারপর সিএনজিসহ যে কোন পরিবহনে খুব সহজেই অপার সৌন্দর্যমন্ডিত ও প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য  এই পাহাড়ে  যাওয়া যায়। 

গারো পাহাড়ের  ইতিহাস ।

বাংলাদেশের ময়মনসিংহ ও শেরপুর জেলার গারো পাহাড় একটি দুর্গম পার্বত্য এলাকা। যেটি বর্তমান সময়ের একটি অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র। এটি মূলত গারো সম্প্রদায়ের মূল আবাসভূমি। অধিকাংশ গারো সম্প্রদায় বসবাস করে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ইস্ট,ওয়েস্ট এবং সাউথ হিলস জেলায়। মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং গারো পাহাড়ে অবস্থিত। গারো পাহাড়ে সারা বছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। গারো সম্প্রদায়ের অধিবাসীরা মানুষ হিসাবে খুবই আন্তরিক ও অতিথিপরায়ণ ।

গারো পাহাড়ের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য দেখলে অবাক হবেন ।

নয়নাভিরাম গারো পাহাড়ের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে সারা বাংলাদেশ থেকে প্রকৃতি প্রেমিকরা ছুটে আসেন । এই পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য সবার জন্য অবারিত করতে শেরপুর জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ গড়ে তুলেছেন গজনী অবকাশ কেন্দ্র ও মধুটিলা ইকোপার্ক। সবুজে ঢাকা গারো পাহাড়ে, নানান গাছে ফুটেছে নানান ধরনের রঙিন ফুল। প্রকৃতির উজাড় করা সৌন্দর্য গায়ে মাখিয়ে দাঁড়িয়ে  আছে  পাহাড়ি গ্রামগুলো ।

 এই পহাড় পৃথিবীর অন্যতম বৃষ্টিপ্রধান  অঞ্চল। সে কারণে পাহাড়ি ঝর্ণাগুলো ছুটে চলেছে বিরামহীন গতিতে। তাই এখানকার শান্ত সিগ্ধ মনোরম পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক মোহমায়া সৌন্দর্য সাবাইকে আকৃষ্ট করে।

রাজশাহী থেকে গারো পাহাড় কত কিলোমিটার ?

গারো পাহাড় বাংলাদেশের অনন্য সুন্দর এক পর্যটনকেন্দ্র। যা সত্যিই অবিশ্বাস্য । রাজশাহী থেকে এই পাহাড়ের দূরত্ব ৩৭৫ কিলোমিটার ।

গারো পাহাড়ের আশে পাশের দর্শনীয় স্থানগুলো কি কি ? 

গারো পাহাড়ের  আশে পাশে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে । তার মধ্যে অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান হচ্ছে লাউচাপড়া বিনোদন কেন্দ্র। এটি জামালপুর জেলা সদর থেকে ৫০ কিলোমিটার ও বকশীগঞ্জ  উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তরে এবংভারতের তুরা পাহাড়ের একবারে পাদদেশে  অবস্থিত। এখান থেকে ভারতের তুরা পাহাড়ের সকল নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় ।

গারো পাহাড়ের আশে পাশে থাকার জন্য কোন হোটেল রিসোর্ট আছে কি না ?

গারো পাহাড়ের আশে পাশে থাকার জন্য ভালো মানের কোন হোটেল বা রিসোর্ট নেই। তবে খুব বেশী  প্রয়োজন হলে এই পাহাড়ের পাদদেশে অপরুপ প্রকৃতির মাঝে গড়ে উঠা বনরাণী ফরেষ্ট রিসোর্টে থাকতে পারেন। এটি গজনী অবকাশ কেন্দ্র থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে রাস্তার দু-ধারে অবস্থিত।

গারোপাহাড়ের আয়তন কত বর্গকিলোমিটার ?

গারো পাহাড় ঘন বন জঙ্গলে আচ্ছাদিত প্রকৃতির অবারিত লীলাভূমি । এই পাহাড়ের আয়তন  প্রায় ৮০০০ বর্গকিলোমিটার ।

গারো পাহাড় বাংলাদেশের কোন কোন জেলায় অবস্থিত ?

গারো পাহাড় ভারতের আসাম রাজ্য ও বাংলাদেশের শেরপুর জেলার শ্রীবরদী,ঝিনাইগাতী,ও নলিতাবাড়ী  উপজেলার বেশ কিছু অংশ জুড়ে অবস্থিত । এছাড়াও ময়মনসিংহ ,জামালপুর ও সুনামগঞ্জ জেলায় এর সামান্য কিছু অংশ রয়েছে । 

গারো পাহাড়ের আদিবাসীদের জীবন যাপন ।

গারো পাহাড়ের অধিবাসীদের জীবন যাপন মোটেই ভালো যাচ্ছে না। প্রতিনিয়ত চলছে তাদের বাঁচা- মরার লড়াই। সরকার আসে সরকার যায়,উন্নয়ন হয় অনেক কিছুর। কিন্তুএই পাহাড়ের অধিবাসীদের ভাগ্যের কোন উন্নয়ন হয় না। গারো পাহাড়ে গারো,হাজং,কোচ,ডালু,বানাই,বর্মণ,হদি ও বংশীসহ বহু নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর  বসবাস। 

তাদের মূল জীবিকা হলো কৃষিকাজ। তারা চৈত্র মাসে শুকনো গাছপালায় আগুন দেয় এবং পুড়ে ছাই হবার পর জমির উপর বীজ ছড়ায়। তারপর ধান কাটার সময় নারী-পরুষ উভয়ই একসাথে ধান কাটে এবং সংগ্রহ করে। চাষাবাদে হাজংরা অত্যন্ত দক্ষ। তাই তাদের চাষের পোকা বলা হয়।

 গারোদের বাস স্থান অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং মনোরম। তারা জীব জানোয়ারের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য গাছের উপর উঁচু মাচা তৈরী করে ঘর নির্মাণ করে। উপজাতীয়দের ভাষা সমপূর্ণ ভিন্ন। তারা নিজেদের মধ্যে তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলে। উপজাতীয়দের মধ্যে অধিকাংশই এখন খৃষ্টানধর্মের অনুসারী। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪